মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় নির্বাচন কমিশন

ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় নির্বাচন কমিশন

স্বদেশ ডেস্ক:

যে কোনো মুহূর্তে ভোট বাতিলের ক্ষমতা চাইছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে গেজেট প্রকাশের আগ পর্যন্ত অনিয়মের প্রমাণ পেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত বেসরকারি ফল বাতিলের ক্ষমতাও চাওয়া হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপে প্রাপ্ত সুপারিশ ও ইসির পর্যালোচনায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) বেশ কিছু সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার এই সংশোধনী প্রস্তাব ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এখন সরকার চাইলে আইন সংশোধন হতে পারে।

নির্বাচন কমিশন ও ইসির আইন সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘সংলাপের আগেই আমরা সংস্কার প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করে ফেলেছিলাম। তবে সংলাপের জন্য সেই ফাইল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্থগিত করা হয়। সংলাপে আসা বিভিন্ন সুপারিশও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সংলাপের আলোকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সংযুক্ত করে আমরা ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছি। যতটুকু সংশোধনী আনা প্রয়োজন বলে ইসি মনে করেছে, ততটুকু সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে।’

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আরপিও সংশোধনসংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবনা গত রবিবার কমিশন সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। সোমবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন নিয়ে যে কোনো পর্যায়ে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণ হলে ভোট বাতিল, নির্বাচনী কাজে অবৈধভাবে বাধা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার যোগসাজশ এবং পোলিং এজেন্টদের ভীতি প্রদর্শন বা বাধার ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা এবং দলের সব স্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেওয়াসহ প্রায় এক ডজন ছোটখাটো সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। এসব সংলাপ থেকে প্রাপ্ত কিছু সুপারিশ ইসি গ্রহণ করেছে।

জানা গেছে, বর্তমানে নির্বাচন চলাকালীন ভোটে কোনো অনিয়ম হলে সেখানকার ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু ভোটগ্রহণের পর রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা করলে সেক্ষেত্রে কমিশনের আর কিছু করার থাকে না। তাই সংশোধিত প্রস্তাবনায় ভোটের ফল ঘোষণা হলেও নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণ মিললে গেজেট আকারে প্রকাশের আগ পর্যন্ত সেই ফল বাতিল করার ক্ষমতা চাওয়া হয়েছে। এ জন্য ৯১ অনুচ্ছেদে দুটি উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

নির্বাচনের যে কোনো মুহূর্তে পেশিশক্তি বা অন্যবিধ যে কোনো কারণে নির্বাচন বন্ধ/বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিধির অধীনে কারও প্রার্থিতা বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেন নতুন করে ওই নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনী কাজে বাধা দিলে বা বাধার চেষ্টা করলে শাস্তির আওতায় আনতে ৪৪ অনুচ্ছেদে উপধারা সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির ব্যবহার প্রতিরোধে ২৫ অনুচ্ছেদে নতুন প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকারীদের সাজা; ভোট গণনার বিবরণী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও এজেন্টদের দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেওয়া এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন খেলাপি বিল ও ঋণ পরিশোধ করেই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রাখা সংক্রান্ত প্রস্তাবও করা হয়েছে।

এ ছাড়া নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার প্রতিশ্রুতি ২০২০ সালে শেষ হয়েছে। নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালনে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দলগুলোকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দিতে খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমার সময় এক বছর থেকে কমিয়ে ৩০ দিনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আরপিওর ৭, ১২, ১৫, ২৫, ৩১, ৩৬, ৪৪, ৮৪, ৯০, ৯১ অনুচ্ছেদসহ বেশ কিছু ধারা-উপধারায় সংযোজন-বিয়োজন ও করণিক সংশোধনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবিত সংশোধনী মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় ভেটিং শেষে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাবে। সেখানে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে তা সংসদে সংশোধন বিল আকারে উপস্থাপন হবে। এ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সংসদে বিল আকারে পাস হলেই সংশোধনীগুলো আরপিওতে যুক্ত হবে। মন্ত্রিসভা কোনো সংশোধনী অনুমোদন না দিলে আরপিও যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877